আমার ঈদ ভাবনা: একাল-সেকাল
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন : ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। আনন্দ ভাগাভাগির এক মিলনমেলা। ছোটবেলায় ঈদের আনন্দটা ছিল আলাদা । দিনগুলো ছিল খুবই মজার। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। তারপরও ছোটবেলা থেকে চাওয়ার আগেই পরিবার থেকে সবকিছু পেয়েছি। কোনো কিছুর অভাব অনুভব করিনি। এখনো মনে হয় না। আমার কাজিন অনেক। তাদের সঙ্গে নতুন জামাকাপড় কেনা নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো। কাজিনদের কারও যদি একটা জামা কেনা হতো, পাল্লা দিয়ে আমি ডাবল কিনতাম। কারও স্যান্ডেলের দামের চেয়ে আমার স্যান্ডেলের দাম যদি বেশি হতো, মনে হতো আমিই সেরা! তখন ঈদের দিন আরেকটা কাজ করতাম সবাই মিলে লটারী কিনতাম। সেই সময় ঈদে দোকানে কিংবা রাস্তার মোড়ে মোড়ে লটারী বসানো হতো, এখনো বসে। যদিও আগের মতো তেমন দেখা যায় না।বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ঈদ আমার কাছে ছিল অনেকটাই সাদামাটা। ঈদের দিন নামাজ পড়ে এসে সবার সাথে সালাম বিনিময় কিংবা কৌশল বিনিময় করা,খাওয়া দাওয়া করা, আড্ডা দেয়া আর ঘুমানোর চেষ্টা করা ছিল সেই সময়ের ঈদের ভাবনা! বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আমার ঈদ ছিল সুবিধা বঞ্চিত শিশু ও অসহায় মানুষদেরকে ঘিরে। ঈদের প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও মেহেদী উৎসব ছিল আমার জন্য আনন্দ, উচ্ছাস ও এক অন্য রকম ভালবাসা।
কিন্তু আগের ঈদের চাইতে এইবারের ২০২০ সালের ঈদ অন্য সবার মতো আতঙ্ক ও ভয়ের। এইবারের ঈদে এক আতঙ্কের নাম সর্বনাশা করো’না। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো প্রাণ প্রিয় এই দেশেও জেঁকে বসেছে প্রাণঘাতী এ ভাই’রাস। মরণ এ রোগের প্রকোপ কমাতে দেশেই এখন চলছে অঘোষিত লকডাউন। যদিও কেউ মানছ, আর কেউ না। স্বভাবতই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আগের ঈদের মত এইবারের ঈদেও বয়ে আনুক সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি; বর্ণিল সাঝে সাজুক প্রতিটি ঘর, পথ-ঘাট ও নগর-বন্দর। সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।