আগৈলঝাড়া যৌতুকের জন্য বালিশ চাপা দিয়ে গৃহবধূকে হত্যা: স্বামীসহ গ্রেফতার ৩ জন

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক গৃহবধূকে তিন লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করা হলে অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানা ও এলাকা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের থানেশ্বরকাঠী গ্রামের সুমন বৈদ্য’র মেয়ে মুক্তি রানী বৈদ্য (১৯)-র সাথে দশ মাস আগে ভালোবেসে পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করে একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী রত্নপুর গ্রামের খোকন সমদ্দারের ছেলে মিঠুন সমদ্দার (২৫)। পরবর্তীতে উভয়পক্ষের সম্মতিতে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মিঠুনের পরিবারের লোকজন ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছে। যৌতুক দিতে মুক্তি রানী বৈদ্য’র পিতা সুমন বৈদ্য অপারগতা জানায়। যৌতুকের টাকা নিয়ে সংসার জীবনে তাদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই অন্তর্দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই নিয়ে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময়ে মুক্তি রানী ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত।
গত ২৫ মে বিকেলে সুমন বৈদ্য মেয়ের সাথে দেখা করতে গেলে মুক্তি রানী তার পিতার কাছে যৌতুকের ৩ লাখ টাকা না চাওয়ায় রাত ৯টার দিকে স্ত্রী মুক্তি রানী বৈদ্যকে বেধরক মারপিট করে। এসময় মুক্তি রানী বৈদ্য যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে পাষন্ড স্বামী মিঠুন তাকে মারধর করে পরিকল্পিতভাবে মা ও বাবাকে নিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঘরের ঝুলিয়ে রাখে।
মুক্তির পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এঘটনায় গৃহবধুর পিতা সুমল বৈদ্য বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আগৈলঝাড়া থানার মামলা নং- ১৭, (তাং-২৫-০৫-২০২০ ইং)। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামী মিঠুন সমদ্দার ও তার পিতা খোকন সমদ্দার, মা রিনা সমদ্দারকে পুলিশ ওই রাতেই গ্রেফতার করেছে।
এ ঘটনায় আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে গতকাল বরিশাল জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ: রব হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। অপরাধীরা যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি পায় সেজন্য আমরা আদালতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রেরণ করবো।

Next Post Previous Post