বিশ্বনাথে কালভার্টে সংযোগ রাস্তা নেই, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ : সিলেটের বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে একটি কালভার্ট নিষ্প্রাণ অবস্থায় অকেজো হয়ে দাাঁড়িয়ে আছে। কালভার্টের দুই পাশে মাটি না থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণ এ কালভার্ট ব্যবহার করতে পারছেন না। কালভার্ট এর দু’পাশে রাস্তার নামমাত্র অস্তিত্ব দেখা গেলেও পর্যাপ্ত মাটি ভরাটের অভাবে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া কালভার্টের দুই পাশের সংযোগ বা এপ্রোচ অংশে পর্যাপ্ত মাটি নেই। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গত মঙ্গলবার এই কালভার্টে এপ্রোচ সড়ক না থাকায় একটি অটোরিকসা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে যাত্রী নিয়ে খাদে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা অটোরিকশা-যাত্রীদের উদ্ধার করেন। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পান অটোরিকশায় থাকা যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজ গেইটের সামন থেকে শুরু হওয়া প্রায় অর্ধ কিলোমিটার বিশ্বনাথ বাইপাস সড়কের সংযোগ ও দন্ডপানিপুর-মহরমপুর, মিনারপাড়া, রাজাপুর, সরুয়ালা, ভোগসাইলসহ কয়েকটি গ্রামের ভিতরে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এই রাস্তার বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ থেকে প্রায় দুইশত গজ দূরে সরকারি প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কালভার্টের নির্মাণ কাজ শেষ হলে চলিত বছরের মে মাসের দিকে কালভার্টটির কাজ সম্পন্ন হয়। কালভার্টের সংযোগ অংশে মাটি না থাকায় যানবাহানসহ জনসাধারণ চলাচল করতে পারছেন না। তবে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এ সড়কে একটি কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চলতি বছরের শুরু দিকে সরকারি অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু কালভার্ট নির্মাণ হলেও কালভার্টটির দুই পাশে মাটি না থাকায় লোকজন চলাচল করতে পারছেন না। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতশত লোকজন যাতায়াত করে আসছেন। কিন্তু কালভার্টে এপ্রোচ থাকায় বয়স্ক-নারী-পুরুষকে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পুহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সম্প্রতি স্থানীয়রা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার জন্য কালর্ভাটে বাশের সাকো দিয়ে চলাচল করছিলেন। গত মঙ্গলবার এই কালভার্টে এপ্রোচ সড়ক না থাকায় একটি অটোরিকসা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে যাত্রী নিয়ে খাদে পড়ে যায়। ফলে বাশের সার্কোটিও ভেঙে যায়। ফলে এখন স্থানীয় এ সড়ক দিয়ে ঝুকি নিয়ে চলাচল করে আসছেন। কালভার্টের দুই পাশে মাটি ভরাট করে সড়কে চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
এব্যাপারে রিকশা চালক ইসলাম উদ্দিন বলেন, কলেজ গেইটের ভিতর দিয়ে দন্ডপানিপুর, মহরমপুর গ্রামে যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করি। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে এ রাস্তার কালভার্ট নির্মাণ হলেও রাস্তার দু-পাশে মাটি ভরাট না হওয়ায় যাত্রী নিয়ে অনেক পথ ঘুরে বাইপাস সড়ক দিয়ে যেত হয়। ওই সড়কেরও বেহল দশা।
দন্ডপানিপুর গ্রামের মহরমপুর গ্রামের মোতাওয়াল্লী ইলিয়াস আলী বলেন, কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় এলাকাবাসী খুশি। কিন্তু কালভার্টের দুই পাশে মাটি ভরাট না হওয়ায় এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পুহাতে হচ্ছে।
এ রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারী ও উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি কলমদর আলী বলেন, কালভার্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। বর্তমানে কালভার্টে সংযোগ রাস্তা না থাকায় গাড়িও চলাচল করে না। এতে বেশি বিপাকে পড়তে হয় কলেজ-স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগী ও বয়স্ক মানুষদের।
বিশ্বনাথ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক বলেন, কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় স্থানীয় কয়েকটি গ্রামবাসী উপকৃত হবেন। কিন্তু এখনও কালভার্টের দুই পাশে মাটি ভরাট না হওয়ায় এলাকাবাসী চলাচল করতে পারছেন না। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী অফিসকে কয়েক বার অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা আবু সাঈদের মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Next Post Previous Post