থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে পর্যটকে টইটুম্বুর কক্সবাজার

কক্সবাজার প্রতিনিধি : ইংরেজি বছরের শেষদিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে কক্সবাজারে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা নানা বয়সের ও বর্ণের মানুষের ভিড়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে বসছে এক মহা মিলনমেলা। বিপণী কেন্দ্রগুলোতেও উপচে পড়া ভিড়। আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত হোটেল মোটেলের কোনো কক্ষ ফাঁকা নেই। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলপথে চলাচলকারী জাহাজগুলোর টিকেটও পক্ষকাল পর্যন্ত আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এরপরও ছুটে আসছে নতুন নতুন মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ইংরেজি বছরের শেষদিন বা থার্টি ফার্স্ট যতই ঘনিয়ে আসছে ততই পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। পর্যটকদের মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যাই বেশি। ছেলেমেয়েদের স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এসেছে সপরিবারে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে। আর এসব মানুষের ভিড়ে গতকাল শুক্রবারও হোটেলগুলোর কক্ষ প্রায় শতভাগ অতিথিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার। তিনি জানান, আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত হোটেল-মোটেলগুলো হাউসফুল থাকবে। ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টোয়াক বাংলাদেশ) সাবেক সভাপতি কিবরিয়া খান জানান, বেড়াতে আসা পর্যটকেরা সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘোরাঘুরি, সূর্যাস্ত দর্শনসহ নানাভাবে সময় কাটাচ্ছেন। একইভাবে সেন্টমার্টিন, ইনানী, হিমছড়ি ও সাফারি পার্কেও এখন পর্যটকদের ভিড়। সোনাদিয়া, মহেশখালী, রামু, দরিয়ানগর, মেদাকচ্ছপিয়া ন্যাশনাল পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটেও ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ভিড় করছেন বলে তিনি জানান। কক্সবাজার সি-বিচ হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নুরুল আবছার জানান, কক্সবাজারে প্রতিদিন প্রায় সোয়া লাখ মানুষের রাতযাপনের সুযোগ রয়েছে।
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা ঢাকা উত্তরার পর্যটক শামীমা ও কায়সার আহমদ জানান, বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। বছরের নতুন দিন থেকে ক্লাশ শুরু হবে। তাই তার আগেই সপরিবারের কয়েকদিনের জন্য কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন। যাবেন সেন্টমার্টিনে। একই কথা জানান রাজশাহীর তানিয়া ও জাফর দম্পতি এবং চট্টগ্রামের কবীর ও কুলসুম। কক্সবাজার ঝিনুক মার্কেটের ব্যবসায়ী হাবিবউল্লাহ বলেন, থার্টিফার্স্ট যতই ঘনিয়ে আসছে পর্যটকের ভিড় ততই বাড়ছে। বিপনী কেন্দ্রগুলোও গভীর রাত পর্যন্ত জমজমাট থাকছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ফখরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে এখন বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটছে। আর তারই দিকে লক্ষ্য রেখে পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরমধ্যে শহরের ৩টি প্রধান স্পটে ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে চব্বিশ ঘণ্টা নজরদারি রয়েছে। সমুদ্রে স্নানকালে কেউ বিপন্ন হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধারের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের জেটস্কি প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া মেরিন ড্রাইভ ও ঝাউবাগানসহ শহরের নির্জন এলাকায় পোশাকধারী ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকে পুলিশ টহলরত রয়েছে।

Next Post Previous Post