সিংড়ায় ধানের দামের প্রভাব ঈদ বাজারে

আবু জাফর সিদ্দিকী, সিংড়া (নাটোর) : চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাজারগুলোতে এবার কেনাকাটার ভীড় তেমন একটা নেই। সিংড়া পৌর শহরের বাজার ঘুরে জানা যায় ধানের দাম না থাকায় এবার ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেনি। এর ফলে কৃষক পরিবারগুলোতে স্লান হতে চলেছে ঈদের আনন্দ। ব্যবসায়ীরাও সন্তুষ্ট নন এমন বেচাবিক্রিতে। রোববার সরেজমিনে সিংড়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলো ক্রেতাশূন্য। দোকান মালিক ও কর্মচারীরা বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। দুই চারজন ক্রেতা এলেও বেশির ভাগই দরদাম করছেন, কিনছে কম। এ সময় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গ্রামের মানুষ, ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবীদের ওপর নির্ভর করে এবারের ঈদকে ঘিরে রকমারি মালপত্রে দোকান সাজিয়েছেন। কিন্তু ক্রেতা না থাকায় তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না। ধানের দামের প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারে। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও কৃষকরা উৎপাদিত ধানের কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না। তাদের হাতে টাকা না থাকায় বাজারে বেচাকেনা নেই।

উপজেলার কৈগ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ও পৌর শহরের চকগোপাল মহল্লার কুতুবুল আলম জানান, এ বছর ধানের ফলন ও দাম দুটোই কম। ধানের দাম কম হওয়ায় পরিবারের চাহিদা মত পোশাক কিনতে পারছি না। বিঘাপ্রতি জমিতে ধান চাষাবাদ করতে খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা অথচ ধান বিক্রি করছি ১২ হাজার টাকায়। গত বছরের মত এবার ঈদে কেনাকাটা নেই।

পৌর শহরের চকসিংড়া মহল্লার মাহমুদুর রহমান বলেন, এ বছর বাজারে তেমন একটা ভীড় নেই। ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষক পরিবারের ক্রেতা কম।

সিংড়া বাজারের সূবর্ণা গার্মেন্টসের মালিক আরিফুল ইসলাম নিশান বলেন, বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ধানের দাম কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় বেচাবিক্রি একটু কম। মিম-মনি গার্মেন্টসের মালিক আলহাজ্ব রমজান আলী বলেন, এবার ধানের দাম কম হওয়ায় তুলনামূলকভাবে ক্রেতা কম।

মেসার্স স্মৃতি সু ষ্টোরের মালিক রেজাউল করিম বাবলু বলেন, গত বছরের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা অনেকটা কম।

এ বছর ধানের দাম কম থাকায় রমজান শেষ হতে চললেও জমেনি ঈদের বাজার। কৃষক পরিবারগুলোতে নেই ঈদ আনন্দ। বোরো মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও গ্রামীণ সমিতি থেকে ঋণ করে চাষাবাদ করেন। মৌসুম শেষে ফসল বিক্রি তারা ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু এ বছর ধানের দাম কম, ফসলের ফলন কম হওয়ায় ও ফসলের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচের টাকাও ঘরে তুলতে কৃষককে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে দেশের কৃষকদের মধ্যে নেমে এসেছে চরম হতাশা। সব মিলিয়ে এ বছর কৃষকদের ঈদের বাজারে নেই আগ্রহ।



from BDJAHAN http://bit.ly/2KfMrvc
via IFTTT
Next Post Previous Post