বিশ্বনাথে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ

মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ‘সূর্যমুুখী’ ফুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। কম খরচে চাষাবাসযোগ্য, লাগে না তেমন সার, ঔষধও। এ কারণে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। গেল বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে প্রায় দেড়গুণ।
এবার চাষের জমি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হেক্টর-এ। সাধারণত প্রতি হেক্টর জমিতে ২ মেট্রিক টন সূর্যমুখী তেল বীজ উৎপাদিত হলে, ৭ হেক্টরে উৎপাদন হবে ১৪ মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার মূল্য কেজি প্রতি ৮০ টাকা দরে ১ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার তেল বীজ উৎপাদিত হবে। সে হিসেবে বিশ্বনাথ উপজেলায় ১১ লাখ ২০ হাজার টাকার তেল বীজ বিক্রির আশা করছেন কৃষকেরা।
সরেজমিন সূর্যমুখী’র বিভিন্ন মাঠ ঘুুরে দেখা যায়, প্রত্যেক মাঠেই গাছে গাছে ফুঠেছে নান্দনিক সূর্যমুুখী ফুল। কোন কোন গাছে রয়েছে একাধিক ফুলের সংখ্যা। কালো ও পুষ্ট হয়েছে অধিকাংশ গাছে ফুলের বীজ। কোনটায় আবার এসেছে কলি।
সে গুলো ফোটার অপেক্ষায়। দু’একজন ব্যতিত প্রত্যেক কৃষকেরই ফলন হয়েছে ভালো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধিতে, সরকারি ভাবে ১ বিঘা করে ৫০ জন কৃষককে এ বছর দেয়া হয়েছে সূর্যমুখী ফুল চাষের প্রদর্শনী। যা গত বছরের তুলনায় দেড়গুণ বেশি। সেই সাথে আরো অনেককে দেয়া হয় প্রণোদনাও।
বিনামূল্যে দেয়া হয় সার ও সূর্যমুখীর ‘হাইসান-৩৩’ বীজ ও বিভিন্ন উপকরণ। এ গুলো পেয়ে সময় মতো ফুল চাষ করে সাফল্য পেতে যাচ্ছেন চাষিরা।
সূর্যমুুখী চাষী উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের মধু মিয়া জানান, অল্প সময় ও পরিশ্রমে অধিক লাভজনক সূর্যমুখী ফুলের চাষ। বীজ রোপণের ৯০-১০৫ দিনের মধ্যে ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারি। এটি চাষের পর যথা সময়ে একই জমিতে আউশ ধান আবাদ করা যায়।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) রাকীবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সূর্যমুখী একটি উৎকৃষ্ট তেল ফসল। এর বীজে রয়েছে ৪০-৪৫% লিনোলিক এসিড। স্বাস্থ্যরক্ষা ও রোগ জীবাণুু প্রতিরোধে সুর্যমুখী তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এবার উপজেলায় ফলন হয়েছে ভালো।
সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ করে কৃষকের ভাগ্য বদলানোর পাশাপাশি ভোজ্যতেলের চাহিদার অনেকটাই জোগান দেয়া সম্ভব।

Next Post Previous Post