নদী ভাঙনে বিলুপ্তির পথে গাইবান্ধার রামনগর গ্রাম

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা : বাঙালি নদীর ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার রামনগর গ্রাম। অতীতের ধারাবাহিকতায় গেল বন্যায়ও শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।শত আন্দোলনের পরও গ্রামটি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনো কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রামনগর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নদী ভাঙনের চিত্র। নদীপাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাকালেই বোঝা যায়, কীভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে গ্রামটি।
নদীর কাছে অসহায় বিস্তীর্ণ তীর যেন বিলীনের অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমানে ভাঙনের তীব্রতা কম হলেও একটু একটু করে গ্রামটিকে গিলে খাচ্ছে বাঙালি নদী।
ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে ও অন্যের পতিত জমিতে আশ্রয় নিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে। বাঙানি নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে তাদের বসতভিটা, ফসলের জমি, গাছপালা। সব হারিয়ে এখানকার অনেকেই আজ নিঃস্ব।রামনগর নদী ভাঙন রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মো. আবদুল মওলা জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-সাঘাটা উপজেলার সীমান্ত এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে বাঙালি নদী। এ নদী ঘেরা সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নে রামনগর গ্রামটি কয়েক যুগ ধরে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আজ বিলুপ্তির পথে। এবার পর পর পাঁচবার বন্যার শিকার হতে হয় রামনগর গ্রামবাসীকে। প্রতিবার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তীব্র ভাঙন।
এতে শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে আমরা কমিটি করে সাধ্যমত আন্দোলন-যোগাযোগ করে আসছি। কিন্তু গ্রামটি রক্ষায় আজও কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তিনি আরো জানান, ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে বাঙালি নদীর ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন ওই গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ। গাইবান্ধা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নদীশাসন করে এ গ্রামকে রক্ষার জন্য স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক নির্মাণ করতে হবে। সেইসঙ্গে বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য এ নদীতে একটি বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। মানববন্ধন শেষে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে নিজেদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেন তারা।এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, অনুন্নয়ন রাজস্ব খাতের একটি প্রকল্পে রামনগর গ্রাম রক্ষার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেলে আগামী বর্ষার আগেই ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যগ ফেলা হবে। এছাড়া জরুরিভাবে কাজ করার কোনো উপায় নেই। কেননা আগের বরাদ্দ সেপ্টেম্বর মাসেই শেষ হয়ে গেছে।

Next Post Previous Post