বিশ্বনাথে আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্র খুনের ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে (পিবিআই)

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সিরাজপুর গ্রামে মাদ্রাসা ছাত্র নুরুল আমীন হত্যা মামলাটি পুলিশ ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি করে আসছিল তার পরিবারের স্বজনরা।এনিয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর এক স্মারকলিপিতে এ অভিযোগ করেছিলেন মামলার বাদি নিহতের ভাই মঞ্জুরুল আমীন।
তিনি দাবি করেছেন- ‘এই খুন কিশোর ছেলে রাতুলের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তার সঙ্গে অন্তত আরও দুই তিন জন খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।’ এই অভিযোগ পাওয়ার পর সিলেটের পুলিশ সুপার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। মামলাটির তদন্তভার এখন পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) হাতে।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় লজিংয়ে বাড়িতে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন এক মাদরাসাছাত্র হাফিজ নুরুল আমীন ওরফে লাইস মিয়া। সে বিশ্বনাথ কামিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ও পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী গ্রামের মৃত সজ্জাদ আলীর ছেলে।
গত ৮ই এপ্রিল মধ্যরাতে সদর ইউনিয়নের পুরান সিরাজপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
তার বুক, পেট ও পায়ে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে গৃহকর্তা সেলিম মিয়া, হেলাল মিয়া, ও কিশোর ছেলে আশফাক আহমদ রাতুলকে আটক করেছিল বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। পরে রাতুলকে আটক রেখে সেলিম মিয়া ও হেলাল মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিহত মাদ্রাসা ছাত্রের পরিবারর স্বজনরা জানিয়েছেন- দীর্ঘ চার বছর ধরে গ্রামের সেলিম মিয়ার বাড়ীতে লজিং থাকতো নুরুল আমীন। সম্প্রতি লজিং পরিবর্তনের জন্যে তার সহপাঠী ও শিক্ষকদের সহায়তা চেয়েছিলো সে। শবে বরাত শেষে ওখান থেকে অন্যত্র চলে যাবার কথা ছিলো তার। ঘটনার দিন মধ্যরাতে হঠাৎ চিৎকার শুনে বাড়ীর লোকজন বাইরে এসে দেখেন ঘরে পড়ে আছে নরুল আমীনের রক্তাক্ত দেহ।
নুরুল আমীনের ভাই মঞ্জুরুল আমীন এলাইস মিয়া জানিয়েছেন- হত্যাকান্ডের ধরণ দেখে বুঝা যাচ্ছিল, এটি ‘পরিকল্পিত খুন’। এবং এই খুন কিশোর ছেলে রাতুলের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তার সাথে অন্তত আরও দুই তিন জন খুনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। রাতুল কিশোর হিসেবে আদালত জামিন দিতে পারে। এজন্য অদৃশ্য কারো পরামর্শে রাতুল এককভাবে শিকার উক্তি দিয়েছে। বিশ্বনাথ থানা পুলিশ নিজ থেকে মামলার এজহার লিখে আমাকে মানসিক চাপ দিয়ে দস্তগত নিয়েছে বলে জানান মঞ্জুরুল আমীন।
মামলার বাদী মঞ্জুরুল আমিন প্রতিবেদককে বলেন আমরা অবগত হয়েছি মধ্যরাতে সেলিম মিয়া ও হেলাল মিয়া চিৎকার করে মানুষ জড়ো করে বলে কে বা কারা মেরে চলে গেছে।
ওয়ার্ড মেম্বার মামুন আসল ঘটনারে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বারবার চাপ সৃষ্টি দিচ্ছেন মামলা আপোষ করার জন্য।তিনি আমাদের বলছেন বিচার কিছুই হবে না। আমাদের টাকা আছে থানা পুলিশ আমাদের পকেটে। পিবিআই আমাদের কিছুই করতে পারবে না।আমরা নিশ্চিত ঘটনার সাথে আরো দুই তিন জন জড়িত আছে। আসল ঘটনা উদঘাটনের জন্য আসামি রাতুল কে একদিনের জন্যও পুলিশ রিমান্ডে আনেন নি। আমাদের সন্দেহভাজন সেলিম মিয়া ও হেলাল মিয়া সহ আরো দুই জনের নাম উল্লেখ করলেও পুলিশ কোনো পাত্তা না দিয়ে আসামিদের পক্ষে কাজ করছে।
মমলার সর্বশেষ খবর জানতে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) উপপরিদর্শক আওলাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি,তদন্ত চলছে।
ওয়ার্ড সদস্য মামুন মিয়া প্রতিবেদককে বলেন আমাকে মামলার বাদী ঘটনার স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করছেন, আমি অত্র ওয়ার্ডের মেম্বার,আমার পক্ষে স্বাক্ষী দেওয়া সম্ভব নয়। আপোষ এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাদী পক্ষকে বলেছি যে যাওয়ার সে চলে গেছে।আপোষ করলে তাদের জন্য ভালো। আমি তাদের একথা বলেছি।
Next Post Previous Post