বিশ্বনাথে করোনা পরীক্ষায় অনীহা, বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় তুলনামূলকভাবে কমেছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা। নানা কারণে পরীক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন এ উপজেলার মানুষ। পরীক্ষার প্রতি আস্থাহীনতা, পরীক্ষার ফি, হয়রানি ও ঝামেলা এড়াতে এখন আর আগের মতো নমুনা দিচ্ছেন না কেউ। এতে শনাক্তের সংখ্যা কমে আসলেও বাড়ছে গোপনে সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি। পরীক্ষার প্রতি এভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন অনেকেই।
সর্বশেষ ঈদুল আজহার পর নতুন শনাক্তসহ এ উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬১ জনে। এ থেকে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ১৩৫জন করোনা রোগী। মৃতু হয়েছে নারী শিশুসহ তিন জনের। আক্রান্ত অন্যরা স্বাস্থবিধি মেনে আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
জানা যায়, গেল ৩ মে সর্বপ্রথম করোনা সনাক্ত হয় উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ঘোড়াইল গ্রামের এক প্রসূতি মায়ের। এরপর ক্রমান্বয়ে করোনা রোগী শনাক্ত হয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। করোনা হানা দেয় সরকারি অফিস পাড়ায়ও। আক্রান্ত হন সাধারণ নারী-পুরুষ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, স্বাস্থ্যকর্মী, ফার্মাসিষ্ট, ব্যাংক স্টাফ, সাংবাদিকসহ একাধিক থানা পুলিশ সদস্য। উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা উপসর্গ ছাড়াই প্রতিদিন নমুনা দিতেন সন্দেহভাজনরা। ফলে দ্রুত বাড়তে থাকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
সূত্র জানায়, করোনা শনাক্ত হলে রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সমাজের ভিন্ন চোখে দেখা আর হেনস্থা ও ঝামেলা এড়াতেই হঠাৎ করে কমতে শুরু করে নমুনা দেয়ার লোকের সংখ্যা। তা ছাড়া নমুনা সংগ্রহে ফি নির্ধারণ ও পরীক্ষার রিপোর্ট জালিয়াতি প্রভাব ফেলে এতে। প্রথমে আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সদস্যরা সেচ্ছায় নমুনা দিলেও এখন অপারগতা প্রকাশ করছেন। এতে শূণ্যের কোটায় নেমে এসেছে নমুনা দেয়ার লোকের সংখ্যা। আর উপসর্গ নিয়ে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হলেও অজানা শঙ্কায় ভয়-ঝামেলা এড়াতে তা গোপন রাখছে পরিবার।
সচেতন মহল বলছেন, পরীক্ষা না করার বড় সমস্যা হচ্ছে-গোপনে সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি। সংক্রমণ প্রতিরোধে পরীক্ষার বিকল্প নেই। সেই সাথে অবশ্যই সরকারি নিদের্শনা ও স্বাস্থবিধি মেনে চলতে হবে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রহমান মূসা বলেন, আগের মতো আমরা এখন নমুনা পাচ্ছি না। বিভিন্ন কারণে মানুষের কনফিডেন্স কমেছে এটা ঠিক। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আগের মতো নেই। আগে বিনা মূল্যে পরীক্ষার সুযোগ থাকায় যথেচ্ছ মানুষ বারবার পরীক্ষা করিয়েছে। এখন ফি নির্ধারণ হওয়ায় সেই প্রবণতা কমেছে।