বাগমারায় সোনালী আঁশ কেটে জাগ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা
নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় চলতি মৌসুমে (সোনালী আঁশ) পাটের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি দেখা দিয়েছে। এজন্য পাট কেটে জাগ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখাকার হাজারো কৃষকরা। বর্ষার পানিতে খাল-বিল, ডোবা-নালা ভরে ওঠেছে তখন সোনালী স্বপ্ন নিয়ে সোনালী আঁশ ঘরে তুলতে বেড়ে যায় কৃষকের ব্যস্ততা। প্রতি কছরের চেয়ে এবার বন্যা ও আষাঢ়ের বৃষ্টি পেয়ে পাট জাগ দিতে সুবিধা হচ্ছে অনেকের। সবাই এখন পাট কেটে জাগ দেওয়ার জন্য খালে-বিলে জমা হচ্ছে। তাই তাড়াতাড়ি করে পাট কাটা শুরু করেছেন তারা। এছাড়া পাটের উৎপাদন ভালো হলেও আশানুরূপ দাম পাবেন বলেও আশাবাদী এই উপজেলার পাট চাষিরা। এখানকার কৃষকরা বলছেন,বিঘাপ্রতি আট থেকে বারো মণ পর্যন্ত পাটের উৎপাদন হয়েছে। যা বর্তমান বাজার দর প্রতিমন দুই হাজার এক শত থেকে দুই হাজার দুই শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এলাকা সুত্রে জানাগেছে,জেলার বাগমারা উপজেলায় কমে যাওয়া পাটের চাষ প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সময় ব্যাপক হারে পাটের চাষ করা হলেও গত প্রায় দশ বছর থেকে নানা কারণে পাটের আবাদ করা থেকে বিরত ছিল কৃষকরা। অনেকে মনে করেন পলেথিন জাতীয় জিনিসের কদর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পাটজাত দ্রব্যাদির ব্যবহার কমে গিয়েছিল। বর্তমানে পলেথিনের ব্যবহার সরকারিভাবেই নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর অফিস জানায়, পাটপণ্যের দ্বিগুণ রপ্তানি বৃদ্ধি, পণ্যের মোড়কে পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলকসহ ব্যবহারে বহুমাত্রিকতায় এবার পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে কিছু জমিতে বেআর-৫২৪ জাতের পাট রোপণ করা হয়েছে সারিবদ্ধভাবে। এবং ভারতীয় জাতের পাট আবাদ হয়েছে বেশি। পাশাপাশি দেশি তোষা পাটের বীজ রোপণ করেছেন কম। উদ্ভাবিত ওই জাত সাধারণ তোষা পাটের জাত থেকে কমপক্ষে ২০ শতাংশ বেশি ফলন হয়। এর উচ্চতা সাধারন পাটের চেয়ে ২০ সেন্টিমিটার বেশি। সাধারণ তোষা পাট কাটার সময়ের তুলনায় নতুন এই জাত ২০ দিন আগে কাটা যায়। সময় বেঁচে যাওয়ায় একই জমিতে আমন চাষে সুবিধা পাবেন কৃষক। সাধারণ পাটের আগা চিকন ও গোড়া মোটা হয়,বেআর ৫২৪ জাতের আগা-গোড়া সমান। বন্যার বৃষ্টির পানিতে এসব পাট পচিয়ে আগে ভাগে ঘরে তুলতে চায় কৃষকরা। এজন্য পাট কেটে জাগ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাজারো কৃষক। তবে উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যের অসমতার কারণে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এছাড়া কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করায় আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে এবং চাষাবাদ হুমকীর মুখে পড়ছে বলে এলাকার কৃষকরা দাবি করেছেন। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিুবুর রহমানের সাথে যোযোগ করা হলে তিনি অফিসে না থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে,বাগমারার দুইটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে এক হাজার আটশ পাঁচ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ করা হয়েছে। পাটে তেমন কোনো পোকা-মাকড়ের উপদ্রব দেখা না গেলেও মাঝে মধ্যে বৃষ্টির পানি হওয়ার কারণে পাটের উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষকরা জানান,পাটের বাজার দর ভালো খাকালে কৃষকরা আর্থিকভাবে এবার অধিক লাভবান হতে পারেন।