বগুড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে সবকিছু লণ্ডভণ্ড বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, নিহত-১
খলিলুর রহমান আকন্দ : আমফান ঘূর্ণিঝড়ের রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে বগুড়ায় সবকিছু যেন লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। গত দু’দিন যাবৎ বিদ্যুৎবিহিন এলাকা জুড়ে ভুতরে পরিবেশ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ জেলার উপজেলাসহ অন্যন্য এলাকার মানুষ।
ঝড়ে উপজেলার রায়নগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সন্নিকটে থাকা বহু বছরের পরানো পাইকড় গাছের ডাল ভেঙে অফিসটি দুমড়ে মুচড়ে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাতে খবর পেয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবির ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় জরুরি রেকর্ড কাগজপত্র অপসারণ করেন।
ঝড়ে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার ভূরঘাটা নামক গ্রামের মঞ্জু মিয়ার একটি লম্বু গাছ ভেঙ্গে তার বাড়ীর উপরে পরে ভেঙ্গে গেছে তার বসতবাড়ী। উপজেলার শব্দলদিঘী বালিকা, ধারিয়া গাংগইট ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনের ছাউনী উড়িয়ে নিয়ে গেছে এবং শীলা বৃষ্টিতে টিনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার কিচক, মোকামতলা, ময়দানহাটা, দেউলি, সৈয়দপুর, আটমুল, পিরব, বুড়িগঞ্জ, মাঝিহট্রসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এলাকার ঘরবাড়িসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পল্লীবিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের বিলহামলা এলাকা নামক স্থানে ঝড়ে বিদ্যুতের ত্যাঁড়ে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয়ে যায়। দহিলা গ্রামে একটি বাড়ীর টিনের চালা উড়িয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ড়ের কাউন্সিলর ও ১ নং প্যানেল মেয়র হারুনুর রশিদের বাড়ি ও খামারে গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ে মহাস্থান দক্ষিণপাড়া গ্রামের বেশ কিছু গাছপালা ভেঙে বৈদ্যুতিক ত্যাঁড়ের উপর পড়ে ২টি বৈদ্যুতিক খুটি হেলে পড়ে যায়।
এছাড়া অনেক অসহায় গরীব ব্যক্তিদের টিনের চালা উঠিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সদরের নিশিন্দারা ইউনিয়নের দশটিকা ফিলপাড়া গ্রামে ঝড়ের তাণ্ডবে একটি পাইকড় গাছ বাসতবাড়ীর উপর পড়ে আহত হয়েছে স্বামী স্ত্রী। এদিকে বগুড়ার কাহালুতে ঘূর্ণিঝড়ে গাছ চাপা পড়ে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৭ মে) ভোর রাতে তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। মধ্যরাতে ঘুর্ণিঝড়ে শুধু যে বসতবাড়ী, গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কিন্তু নয়, ব্যাপক ভাবে ক্ষতি হয়েছে প্রান্তিক কৃষকেরা।
শীলাবৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে অনেকের জমির ধান জমিতেই পরে রয়েছে।
বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,বাড়ি-ঘর, উঠতি ফসলী ইরি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে উড়ে গেছে টিন চালা,মাটির দেওয়াল ধসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলির অনেকেই আশ্রয়হীন হয়ে খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাছে তাদের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত গরীব পরিবার গুলো সরকারি সহায়তার আশায় পথ চেয়ে আছেন।