বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝুঁকিতে ঝালকাঠির লাখ মানুষ
রহিম রেজা, ঝালকাঠি থেকে : ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় বিষখালী নদীতে বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছেন উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ। ঘূর্ণিঝড় আম্পান আসার খবরে ২৯ কিলোমিটার বি বিষখালী নদী তীরবর্তী মানুষের চোখে ঘুম নেই দুশ্চিন্তায়। এর আগের ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা ও বুলবুলে জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা কাঁঠালিয়া। বেড়িবাঁধ না থাকায় চার ইউনিয়নের জনগণের দুর্ভোগের শেষ নেই। বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ক্ষোভের অন্ত নেই। বাঁধ না থাকায় প্রতি বছর জলোচ্ছাসে ফসল ও মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় সিডরে এ উপজেলায় ২১ জন মারা যায়। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ঘূর্ণিঝড় আইলা ও বুলবুলে আঘাতহানে কাঁঠালিয়ায়। কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও বিষখালী নদীতে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেসে গেছে জেলেদের জাল, নৌকা। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ও ছোট-বড় পুকুর। নষ্ট হয়ে গেছে কাঁচা আধা কাঁচা ঘর-বাড়ি ও ফসলের ক্ষেত। এছাড়াও স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে আমুয়া, হেতালবুনিয়া, মশাবুনিয়া, চিংড়াখালী, জয়খালী, কাঠালিয়া সদর সহ প্রায় ২০টি গ্রামের ফসলি মাঠ প্লাবিত হচ্ছে। স্থানীয় জেলে মিরন জোমাদ্দার বলেন, বইন্যার (সিডর) সময় গলা পর্যন্ত পানিতে মোগো ঘর দরজা গরু-বাছুর সব ভাসাইয়্যা লইয়্যা গ্যাছিল। কাঁঠালিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ( ভারপ্রাপ্ত ) প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বেড়িবাঁধ না হওয়ায় আমরা বন্যার সময় খুবই অসহায় অবস্থার সন্মুখীন হই। ঘর-বাড়ি আর কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বাঁধ না থাকায় প্রতিদিন স্বাভাবিক জোয়ারে বিষখালী নদীর পানি সহজেই প্রবেশ করে তলিয়ে যাচ্ছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর আবাদী জমি। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান মো. এমাদুল হক মনির বলেন, উপজেলাবাসির দীর্ঘ দিনের দাবি এ বেড়িবাঁধ নির্মাণের। বাঁধটি নির্মাণ করে উপজেলার জনসাধারণকে নিরাপদে রাখা সরকারের দায়িত্ব। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটি নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।