রাজশাহীতে দিন দিন বেড়েই চলেছে শিশু শ্রম ও ভিক্ষাবৃত্তি

নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে শিশু শ্রম ও ভিক্ষাবৃত্তি। দারিদ্রের কষাঘাতে বিভিন্ন পরিবারের শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করার আগেই জীবিকা অর্জনের জন্য নামতে হয়েছে কর্মক্ষেত্রে। যে বয়সে শিশুদের হাতে বই থাকার কথা সে বয়সে তারা জীবিকার জন্য হোটেল রেস্টুরেন্ট নির্মাণ কাজ, ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজ সহ অটো ভ্যান, অটো রিক্সা ও ভুটভুটি চালানো সহ বিভিন্ন প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে শিশুদের। আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ বলা হলেও বাস্তবে তার পুরোটাই উল্টো। তেমনি এক শিশুর সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয় থানা মোড়ের এক রেস্টুরেন্টে। সেখানে ওই শিশুকে জীবিকার জন্যে। যে সময় শিশুরা ঈদের আনন্দ সহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যায় স্কুল ছুটির সময়। এমনকি সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা করা সহ যাবতীয় বিনোদন নিয়ে থাকেন শিশুরা। কিন্তু দূর্ভাগ্য এ শিশুটির। তার নাম শুভ(১০)। সে গুবিরপাড়া গ্রামের এমদাদুলের ছেলে। শুভ বলে আমার বাবা এক সময় মাদক সেবনের জন্য যেতে হয় জেলে বাধ্য হয়ে কাজে নামতে হয়। হোটেলে শুরু তার কাজ। দুটি হোটেলে কাজ করার পর এ হোটেলে কর্মরত শুভ। শুভ তানোর পৌর এলাকার সিন্দুকাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে মাত্র কয়েকদিন বই হাতে স্কুলে গেছে। পড়ালেখার অনেক ইচ্ছা শুভর। নিজে পড়তে না পেরে বছরের ছোট ভাই আব্দুল আলিমকে কাজ করে হলেও পড়ালেখা করাবেন শুভ বলে জানায়। জানা গেছে, জেলায় শত শত শিশু শ্রমিক রয়েছে। অপর দিকে শিশু ভিক্ষুকের সংখ্যাও বেড়ে যাওয়ায় চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সচেতন মহল। স্থানীয় নয় বহিরাগত শিশুরাও ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জন্য তারা বিরক্তির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছেন। অনেক বাবা মা কোন কাজ না করে সন্তানদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। আবার কোন শিশু টাকার জন্যে হাত পা ধরে কান্নাকাটি করে বলতে থাকে তার বাবা নেই মা তাদের নিয়ে বড় অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে শিশু শ্রম বন্ধের আইন থাকলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন না থাকায় বেড়েই চলেছে শিশু শ্রম।এবিষয়ে রাজশাহী হোটেল ও রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ভাতা কম হওয়া ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যোগাযোগ না করায় প্রশিক্ষণ নিয়ে আগ্রহ নেই নি¤œ আয়ের শ্রমিকদের। তিনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকার আদায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন আছে, এটা শ্রমিকরা জানেন। কিন্তু কেউ তাদের সেই আইন শেখাবে এই সুযোগ কম। ফলে এগুলো নিয়ে আর কেউ ভাবেন না। তবে রাজাশাহী শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তনের উপ-পরিচালক মনিরুল আলম বলছেন, প্রতি অর্থবছরে শিল্প সম্পর্ক বিষয়ক ২টি এবং শ্রম অধিকার ও আইন বিষয়ক ১০ থেকে ১২টি এক সপ্তাহ মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স তারা পরিচালনা করে থাকেন। তবে সব শ্রমিক এই প্রশিক্ষণ পাননি।



from BDJAHAN http://bit.ly/2J7b9gC
via IFTTT
Next Post Previous Post