গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের রূপায়িত বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কা

রফিক সরকার গোয়াইনঘাট (সিলেট) সংবাদদাতা : গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের রূপায়িত বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসার পাহাড়ি ঢলে উপজেলার আসাম পাড়া হাওর, সানকিভাঙ্গা হাওর, বাওন হাওর, বাউরভাগ হাওর, সহ উপজেলার বেশ কয়েকটি হাওরে রূপায়িত বোরো ফসলি জমিনে পানি উঠে ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক মোঃ সুরুজ আলী জানান, গত বছর ঘনঘন বন্যায় আমাদের প্রধান ফসল আমন ধানের আবাদ নষ্ট হওয়ার কারনে আমাদের উপজেলার যত কৃষি ও অ-কৃষি জমিন ছিলো, বিগত দিনে যেসব আবাদ হয়নি সে সব জমিও এবার আবাদের আওতায় নিয়ে আসে কৃষকরা। কিন্তু এই বোরো আবাদি ধানি জমিতে সরকারি ভাবে কোন সেচ না থাকায় ও বোরো মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ার কারনে প্রতিটি কৃষকই বিল থেকে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে বোরো ধানে সেচের পানি ব্যবহার করেছেন। আমাদের কষ্টের ফলে জমিতে ফলে ছিল সোনালী ফসল। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমাদের এলাকার বোরো ধানের ব্যাপকহারে ক্ষতি হয়েছে। আমি ব্যাংক থেকে ঋণ করে পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করে ছিলাম, ফসলও খুব সুন্দর হয়ে ছিলো কিন্তু হঠাৎ করে অতিমাত্রায় বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারনে আমাদের এলাকার সকল কৃষকের ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। যদি দুই এক দিনের মধ্যে জমিনের পানি না শুকায় তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মারা যাব । পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি কারনে আমাদের উপজেলার হাওরাঞ্চচলে বন্যা সৃষ্টি হয়। আর সেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের উপজেলা কৃষকরা । আমরা চাই ছোট খাটো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বোরো ধান সহ রবি শস্যের যে ক্ষতি হয়, সেটা যেনো আগামি দিনে আর না হয়। এর জন্য আমরা এই বাওন হাওরে বোরো আবাদি জমিতে একটি বেরি বাদ দেওয়ার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন জানাই। এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী জানান, ভারতের মেঘালয় পার্শ্ববর্তী এলাকা হওয়ার কারনে ভারতের মেঘালয় ও তার আশপাশ এলাকায় বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে যে কোন সময় আমাদের এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারনে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার বিল সংলগ্ন জমিতে যে বোরো চাষ করেছে কৃষকরা সেই জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে । তবে দুই এক দিনের মধ্যে যদি পানি কমে যায় তাহলে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান। এবং কৃষি কর্মকর্তা আরোও বলেন, চলতি অর্থ বছরে আমাদের বোরো আবাদের লক্ষ ছিলো ৮ হাজার ১ শত ২৫ হেক্টর। কিন্তু আমাদের উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৭০০ শত ৫০ হেক্টর। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পরে তাহলে অতীতের তুলনায় সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে কৃষকের ঘরে বোরো ধান উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Next Post Previous Post