হবিগঞ্জে ছাদ কৃষিতে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ডিসি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : অল্প সম্পদের যথাযথ ব্যবহার দারিদ্র বিমোচনের অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। মেটানো সম্ভব ফলমুল, শাক, সবজির চাহিদাও। এ লক্ষে পরিত্যক্ত সব জমি কাজে লাগানোর পাশাপাশি ছাদেও সবুজের সমারোহ গড়ে উঠছে। শহরে খালি জায়গা না থাকায় ছাদও কাজে লাগানোর প্রতি জোর দেয়া হচ্ছে।
আর হবিগঞ্জে ছাদ কৃষির সফলতা নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। শুধু নিজে নয়, স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অন্যদেরও। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ছাদকে একখণ্ড কৃষি জমিতে পরিণত করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বাগান।
পুরো ছাদ জুড়েই সবুজের সমারোহ। শুধু নিজের কার্যালয় নয়, উদ্বুদ্ধ করছেন অন্যান্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদেরও। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অফিসে ছাদ বাগানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম জেলা শিক্ষা অফিসের ছাদ। এ বাগান দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ছাদ ফল, ফুল আর দেশীয় সবজিতে সয়লাব। এখানে আম, কমলা, মাল্টা, আমড়া, কামরাঙ্গা থেকে শুরু করে ঢেঁরস, লাল শাকসহ হরেক রকম ফল আর সবজি শোভা পাচ্ছে।
ছাদ কৃষিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে এ উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। শুধু নিজের অফিসের ছাদ নয়, ইতিমধ্যে বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের ছাদও কৃষি জমিতে পরিণত করা হয়েছে।
অন্যান্য সরকারি অফিসের ছাদেও যেন কৃষি করা হয় সে জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। কম সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহারের লক্ষে সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি অফিস ও বিভিন্ন বাসার ছাদেও কৃষি করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন।
নিজে স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান অন্যদেরও। ইতিমধ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে জেলা শিক্ষা অফিসের ছাদেও অপূর্ব কৃষি বাগান গড়ে তুলা হয়েছে। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
বাগানের টবে শোভা পাচ্ছে কমলা, আপেল, বারি-১ জাতের মাল্টা, আম, কামরাঙ্গা, আঙ্গুর, থাই আমড়া, ডালিম, ড্রাগনসহ অন্তত ৭০ প্রজাতির ফল ও সবজি গাছ। এসব অফিসের কর্মকর্তারা নিজস্ব অর্থায়নে এবং পরিচর্যায় এ ফলদ বাগান গড়ে তুলেছেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ জানান, ছাদের ওপর সারিবদ্ধভাবে বড় ফুলের টবে মাটি ভরাট করে প্রতিটি টবে একটি করে ফলদ গাছ রয়েছে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজস্ব অর্থায়নে এবং পরিচর্যায় এ ফলদ বাগান গড়ে তুলেছেন। অবসর সময় বাগানে সময় কাটান তিনি। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন অফিসের সহকর্মীরা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, কম সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতেই মূলত ছাদ বাগানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি অফিসের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও উদ্বুদ্ধ করছেন ছাদ বাগানের প্রতি। তিনি বলেন, শহরে মানুষের জায়গা কম।
অধিকাংশ মানুষই পুরো জায়গা নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেন। তাই ছাদ বাগানের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। যদি কেউ ছাদ বাগান করতে গিয়ে সহযোগিতা চান তবে সরকারিভাবে তাদের এ সহযোগিতা করা হবে। ছাদ বাগানের ফলে সবকিছু আর কেনার উপর নির্ভর করতে হবেনা। সবজি, ফলমূল নিজেরা ফলিয়েই ভোগ করা সম্ভব।
জেলা কৃষি অফিস জানায়, শহরে বসবাসরত মানুষ তাদের ভবনের ছাদে স্বল্প পরিসরে ফল ও সবজি উৎপাদন করে প্রতিদিন বিষমুক্ত ফল ও সবজি খেতে পারেন। নিজেদের চাহিদাও মিটবে পাশাপাশি বিক্রিও করতে পারবে। ছাদ কৃষিতে যে ধরনের সহযোগিতা লাগবে তা কৃষি বিভাগ দিবে।

Next Post Previous Post