হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড় এখন হিমালয়কন্যা হিসেবে পরিচিত। শীতপ্রবণ এ জেলার তেঁতুলিয়া থেকে দেখা যায় বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এবারও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। তাইতো দুর্লভ এ চিত্র দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা।
বৃহস্পতিবার সকালে তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাকবাংলোসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে দেখা মিলেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা অপরূপ দৃশ্য। যা সূর্যের তেজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি স্পষ্ট দেখা যায়।
স্থানীয়দের মতে, গতকয়েক দিন আকাশ পরিষ্কার থাকলেই সকালে স্পষ্ট দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তারপর ক্রমান্বয়ে ঝাপসা হয়ে হারিয়ে যায় এ পর্বত। আবার বিকেলে সূর্যকিরণ যখন তির্যকভাবে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ে পড়ে তখন আবারো চোখে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। এ দৃশ্য দেখতে ছুটে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন জেলার মানুষ।
কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শীতের আগমনী বার্তার পূর্বে আকাশে ভেসে ওঠে হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভূটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ এবং শিলিগুড়ির দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব মাত্র ১১ কিলোমিটার।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আকাশ পরিস্কার থাকার কারণে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলেছে। নভেম্বর পর্যন্ত এ দৃশ্যের দেখা মিলতে পারে।
পঞ্চগড় জেলা মোটর মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা এবং বাংলাবান্ধা থেকে ঢাকা পর্যন্ত হানিফ, শ্যামলী বা নাবিল পরিবহনের এসি/ননএসি বাস চলাচল করছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে বিমানে সৈয়দপুর পর্যন্ত আসতে পারেন। সৈয়দপুর থেকে বাস, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কারে করে যেতে পারেন বাংলাবান্ধা পর্যন্ত। উপভোগ করতে পারেন পঞ্চগড়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
বাংলাদেশ-ভারতের বুক চিরে বয়ে যাওয়া সীমান্ত নদী মহানন্দায় সূর্যাস্ত দর্শন, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, সমতল ভূমিতে গড়ে ওঠা সবুজের নৈসর্গ চা বাগানসহ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর পঞ্চগড়। এছাড়া বাড়তি পাওনা হিসেবে তেঁতুলিয়ায় দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যেন স্বর্গীয় অনুভূতি।

Next Post Previous Post