সবুজ বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সবার সম্মিলিত চেষ্টা প্রয়োজন

মুহাম্মদ আজাদ : দেশে শিক্ষিত লোকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের সংখ্যা অনেক বেশি। যার ফলে শিক্ষিত যুবকেরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে বেশ প্রশংসা কুড়িঁয়েছেন। বর্তমানে যুবক শ্রেণি মেধা,কর্মদক্ষতা, এবং যোগ্যতার মাপকাঠির ভিত্তিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডসহ সমাজের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। সবুজ আন্দোলনের ক্ষেত্রে ও দেখতেছি তরুনেরা বেশ আগ্রহী। গাছ লাগাও পরিবেশ বাঁচাও, দেশ বাঁচাও। এসবের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন যুবকেরা।
অবশ্যই ইতিমধ্যে সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বাপ্পী সরদার মুজিববর্ষেই (০১) কোটি বৃক্ষরোপণের অঙ্গীকার করেছেন।যার ফলে বর্তমানে বিভিন্ন জেলা উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে। যা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যেগ। আমাদের দেশে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়লেও বনভূমির পরিমান বাড়েনি বরং কমেছে। আয়তনের তুলনায় দেশের বনভূমি থাকা প্রয়োজন ২৫ ভাগ আর সরকারি হিসাবে তা আছে ১৭ ভাগ। কিন্তুু ইউনেস্কোর হিসাবে তাহলো মাত্র ১০ ভাগ।
তাই আমাদের দেশে বনভূমির পরিমান বৃদ্ধি করতে হবে। আর এই বনভূমি বৃদ্ধির জন্য সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসুচির প্রবর্তন এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে যেটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে তা হলো গ্রামীণ বন। গ্রামীণ রাস্তাঘাট, বাঁধ, পতিত জমি,কৃষি জমি ইত্যাদি সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে বনাঞ্চল বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। বর্তমানে আমাদের দেশের যুবক শিক্ষার্থীরা কৃষকের পাশে থেকে কোন রকম অর্থ-ছাড়াই ধান কাটা, ঝোঁপ-জঙ্গল পরিষ্কারসহ সার্বিক কাজে সহযোগীতা করছেন। যা আগামীর তরুন প্রজন্মকে ভালো কাজে উজ্জ্বীবিত করবে।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, সম্প্রতি আমরা টেলিভিশন চ্যানেলে দেখলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে গাছ কাটার বিরুদ্ধে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানাতে। কোন ধরনের হামলা, মামলা, ভাংচুর নেই অথচ হ্রদয়স্পর্শী সেই প্রতিবাদ। কাটা গাছের কান্ডে কাফনের কাপড় জড়িয়ে মৌন মিছিল করেছেন তারা। আর সেই প্রতিবাদটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসহ, মিডিয়ারও দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছে।
আমাদের দেশে বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার মানুষকে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করার জন্য বৃক্ষরোপণ করে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টি করা আবশ্যক। আর এ পরিকল্পপনা যদি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় তাহলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে মানুষ, পশু-পাখি ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা যাবে। তাই আমাদের উচিত সকলের সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যেমে দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য বৃক্ষরোপণ কর্মসুচি হাতে নেওয়া।

শিক্ষক ও কলামিস্টঃ
সমন্বয়ক, (সবুজ আন্দোলন) ফেনী জেলা।

Next Post Previous Post