সাপাহারে বাল্যবিয়ে দেওয়ার অপরাধে কাজী ও পাত্র জেল হাজতে

প্রদীপ সাহা,সাপাহার(নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর সাপাহারে বাল্যবিয়ে দেওয়ার অপরাধে কাজী ও পাত্রকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা যায়,এই মামলার বাদী মেয়ের দাদা মো: ইব্রাহিম জানান, গত ০৬/০১/২০২০ সকাল ৮টায় মোসা: মঞ্জিলা(১৩) নিতপুর শহীদ পিংকু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ঐ বিদ্যালয়ের উদ্দ্যেশে রওনা হয়। স্কুল ছুটির পরে বাড়িতে না ফিরলে বাড়ির সকলেই বিভিন্ন যায়গায় খোঁজ-খোঁজির এক পর্যায়ে শ্রীকৃষ্ণপুর কুলাডাঙ্গা গ্রামের আবু তালেবের ছেলে মো: আকতারুল ইসলাম,শাকিল ও আতাউর জানায় যে- কুলাডাঙ্গা গ্রামের আফসার আলীর পুত্র মো: আসাদুল (২২) তার কিছু বন্ধু-বান্ধবসহ মঞ্জিলার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোরপূর্বক চার্জার ভ্যানে তুলে নিয়ে সারাইগাছীরদিকে যাইতে দেখে। বিষয়টি আসাদুলের পরিবারকে জানালে তার পরিবার বলে আপনার নাতনী আছে পরে বের করে দেওয়া হবে,এক পর্যায়ে তারা বিভিন্ন রকম টালবাহানা করতে থাকে। শেষে আসাদুলকে ১নং ,মোসা: নাজমা ওরফে নাজু স্বামী:মো: তসলিম ২নং ,আলমগীর হোসেন পিতা: জালাল ৩নং, আমানল্লাকে পিতা: মো: জিয়ার ৪নং,৫নং পারভীন স্বামী: আফসার আলী আসামী করে মামলা নং ১১ তাং ১৫/০১/২০২০ তারিখে পোরশা থানায় ধারা ৭/৩০/২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইন সংশোধনী ২০০৩ রুজু করা হয় এবং বিষয়টি সহকারী পুলিশ সুপার সাপাহার সার্কেল কার্যালয়ে অবগত করা হয়। গতকাল শনিবার সকাল ১০ টায় সহকারী পুলিশ সুপার সাপাহার সার্কেল বিনয় কুমার’র সাথে কথা হলে তিনি জানান-নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম স্যারের সহায়তায় মোবাইল ট্রেকিং এর মাধ্যমে আসামীকে গ্রেফতার করার উদ্দ্যেশে পোরশা থানার এস.আই শাহিন চৌধুরী ভিকটিমের এক আত্মীয়কে সাথে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে চট্টগ্রামের থানা পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমসহ আসামীকে গ্রেফতার করে পোরশা থানায় আনা হয় এবং আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় মেয়েটিকে সে রেজিষ্ট্রী করে বিয়ে করেছে। মেয়ের বয়স কম হওয়ায় তাকে বলা হয় কোন কাজী তোমাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রী করেছে,তখন সে জানায় সাপাহার কাজী অফিসের কাজী। গত ২৯ জানুয়ারী২০২০ বুধবার সন্ধ্যায় সাপাহার কাজী অফিসের কাজী মোবারক আলীকে সাপাহার সার্কেল অফিসে আনা হয় এবং আসাদুল ও মঞ্জিলার বিয়ের বিষয়টি জানানো হয়, প্রথমে কাজী বিষয়টি অস্বীকার করে টালবাহানা শুরু করে। কিছুক্ষন পরে আসামী আসাদুলকে কাজীর মুখোমুখি করলে কাজী মোবারক আলী- “হাসান আলী মিড়পুর ঢাকা” নামে ভূয়া সীল তৈরী করে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করেছে স্বীকার করলে তাকে আটক করে। ঐ রাতেই সহকারী পুলিশ সুপার বিনয় কুমার পোরশা থানা পুলিশের হাতে আসামীকে তুলে দেন। শনিবার সকালে পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শাহিনুর ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান-ভূয়া সীল তৈরী করে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হলে বৃহস্পতিবারে আসামী আসাদুল ও কাজীকে নওগাঁ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় । আটক কাজী মো: মোবারক আলী সাপাহার উপজেলার কোচকুড়লীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ইসলাম ধর্মের শিক্ষক এবং সাপাহার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

Next Post Previous Post