হবিগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে কুল, দেশি বরই বিলুপ্তির পথে

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : পাহাড় ও হাওর বেষ্টিত জেলা হবিগঞ্জে দেশি বরই আগের মতো এখন দেখা যায়না আর। ক্রমেই যেন বিলুপ্ত হতে চলেছে এই দেশি বরই। তবে ছিটেফোঁটা যেটুকু টিকে আছে, সেসব গাছে দেশি বরই’র ব্যাপক ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি অফিস জানায় দেশি বড়ই বদলে হবিগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে কুল বরই।
এক সময় জেলার বিভিন্নস্থানে উঁচু জমিতে, সড়কের পাশে অনেকটা অবহেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো ‘টক বরই’গাছ। নানা কারণে কৃষক আগাছা হিসেবে মনে করতো এ ধরনের বরই গাছকে। মানুষের আগ্রহ না থাকায় পাখিদের খাবার জোগাতো এই টক বরই। অবহেলার কারণে কয়েক বছরের ব্যবধানে টক বরই বিলুপ্তির তালিকায় চলে গেছে। তবে এখনও অনেকের আগ্রহ রয়েছে টক বরই।
এ জেলার বাহুবল উপজেলার কালিগজিয়ার শেখর দেববর্মা বললেন, দেশি বরই গাছে কোন প্রকারের ওষুধ দিতে হয় না। এমনিতেই ফল আসে। আর মানুষের কাছে এখনো দেশি বরই’র চাহিদা রয়েছে। লোকজনও বেশি দামেই দেশি বরই কেনে। বাহুবলের পাহাড়ি এলাকার বিভিন্নস্থানে দেশি বরই গাছ রয়েছে। এতে এবার ভাল ফলন হয়েছে।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার সাবাসপুরের বাসিন্দা নাজমা চৌধুরী জানান, তাদের একটি দেশি বরই গাছে ভাল ফলন হয়েছে। আচার তৈরিতে টক বরই প্রয়োজন। টক বরইয়ে আগাম ফলন হয়, শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। চুনারুঘাটের জারুলিয়ার শাহজাহান মিয়া বলেন, দেশি বরইয়ের বিকল্প নেই। এক সময় রাস্তার পাশে জন্মানো বরই গাছ কৃষকরা কেটে ফেলতেন। এখন রাস্তার পাশে তেমন একটা এ বরই গাছ দেখা যায় না। তারপরও তাদের এলাকার প্রায় বাড়িতেই দেশি বরই গাছে ভাল ফলন হয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ তমিজ উদ্দিন খান বলেন, হবিগঞ্জের মাটিতে কুল (উন্নত জাত) চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এরমধ্যে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করছেন।’
জেলার প্রায় ১৪৬ হেক্টর জমিতে ‘কুল’ চাষ হচ্ছে। এর চাষাবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এখনও জেলার বাসা বাড়ি এবং পাহাড়ি এলাকায় দেশি বরই গাছ টিকে আছে। এগুলো সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব।

Next Post Previous Post