শুভ বড়দিন আজ

বিশেষ প্রতিনিধি : গির্জায় গির্জায় আজ প্রার্থনা হবে। পৃথিবী তথা মানবতার কল্যাণে মহান যিশুর শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়া হবে মানুষে মানুষে। আলোকসজ্জা, ক্রিমসাস ট্রি, সান্তাক্লজের উপহার প্রদানে সময় কাটবে আনন্দে।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন (ক্রিসমাস) আজ বুধবার। দুই হাজার বছর আগে এই শুভ দিনেই পৃথিবীকে আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে কুমারিমাতা মেরির কোলে জন্ম হয়েছিল যিশুর। দিনটি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, মানবজাতিকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যিশুখ্রিস্টের জন্ম হয়। তার জন্মদিনটিকে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা তাই ধর্মীয় নানা আচার ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করে। এটি তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। তাই আজ গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্র্রদায়ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করছে তাদের সবচেয়ে বড় এ উৎসব।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস- ঈশ্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একজন নারীর প্রয়োজন ছিল। সেই নারীই কুমারী মেরি। যাকে মা মেরি নামে ডাকে খ্রিস্টানরা। ‘ঈশ্বরের আগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতায়’ মা মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন। ঈশ্বরের দূতের কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস, বাংলায় বলা হয় ‘যিশু’।
শিশুটি কোনো সাধারণ শিশু ছিল না। ঈশ্বর যাকে পাঠানোর কথা বলেছিলেন মানবজাতির মুক্তির জন্য। যিশু নামের সেই শিশুটি বড় হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শোনান।
বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা এতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান।
বড়দিন উপলক্ষে আজ যিশুভক্তরা নানা আয়োজন করেছে। ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে রঙিন আলো, ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে। নানা ধর্মীয় আচারে পালিত হবে দিনটি। গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন বাতিতে।
যিশু গোয়ালঘরে জন্মেছিলেন বলে তার অনুসারীরা ঘরে ঘরে প্রতীকী গোশালা তৈরি করেছে। সকালে গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে দিনের শুরু হবে আজ। প্রায় সব পরিবারেই থাকে কেক, পিঠা, পোলাও-বিরিয়ানিসহ বিভিন্ন সুস্বাদু ও উন্নত মানের খাবারের আয়োজন। সবচেয়ে বড় উৎসব হওয়ায় পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মেলবন্ধনও ঘটে এদিন।
গির্জায় ধর্মীয় গান হবে। সান্তাক্লজ শিশুদের নানা উপহার দেবে। অনেকে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বড়দিনকে বেছে নেন।
বাংলাদেশের অভিজাত হোটেলগুলোতেও ছুঁয়ে যায় বড়দিনের উৎসবের আনন্দ। উৎসব ঘিরে আনন্দমুখর আয়োজনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোর অভিজাত তারকাবহুল হোটেলগুলো। রঙিন বাতি, ফুল আর প্রতীকী ক্রিসমাস ট্রিতে সাজানো হয়েছে বড়দিন।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। সংবাদপত্রগুলো দিনটিতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, সরকারি-বেসরকারি টিভি ও রেডিওতে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url