নয়া সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল
স্টাফ রিপোর্টার : দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেটের আরো তিনজন স্থান পেয়েছেন। তারা হলেন-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও ডা: মুশফিক হোসেন চৌধুরী। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ তিনজনসহ ৩২ জনের নাম ঘোষণা করেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেট অঞ্চলের মোট ৭ নেতা স্থান পেলেন।
নয়া কমিটিতে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ প্রাপ্তির বিষয়টি ছিল বৃহস্পতিবার রাতের সিলেটের ‘টক অব দ্যা সিটি’। অনেকটা চমকের মতোই তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেলেন। আগের কমিটিতে পর পর তিনবার সিলেট অঞ্চল থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। এবার তিনি এ পদ থেকে বাদ পড়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ঘোষণার পর রাতে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল তার পূর্বসূরি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সাথে সাক্ষাৎ করে তার দোয়া নিয়েছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। এ সময় তিনি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ও তাকে মিষ্টিমুখ করান। গতরাতে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাবেক জেলা সেক্রেটারি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর শাখার সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাবেক মহানগর সেক্রেটারী আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা সেক্রেটারী নাসির উদ্দিন খান, মহানগর সেক্রেটারি অধ্যাপক জাকির হোসেনের সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শফিউল আলম নাদেলকে রাতে নগরীতে একটি আনন্দ মিছিলও বের করা হয়।
এক প্রতিক্রিয়ায় শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করেন এবং তার মতো তৃণমূলের একজন নেতাকে মূল্যায়ন করায় দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অতীতেও আমি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বে ছিলাম। আগের মতো ভবিষ্যতেও তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় অর্পিত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী ॥ শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল স্কুলজীবন থেকেই ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি সিলেট শহর স্কুল (বর্তমানে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়) ছাত্রলীগের সভাপতি হন। ১৯৮৮ সালে তিনি সিলেট এম সি কলেজ ছাত্রলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য, ১৯৮৯-৯৩ সাল পর্যন্ত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য, ১৯৯৩-৯৭ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৭-২০০১ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ২০০৪-২০১২ সাল পর্যন্ত সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এবং ২০১২ সাল থেকে গত ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন নাদেল। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উইমেন্স উইংয়ের চেয়ারম্যান, সিলেট অ্যাপার্টমেন্ট এন্ড রিয়েল এস্টেট গ্রুপের সভাপতি, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি, সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন, জালালাবাদ অন্ধকল্যাণ সমিতি এবং সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য। তিনি সিলেট ক্লাব লিমিটেডেরও প্রধান উপদেষ্টা। এর বাইরে তিনি আরো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি ১৯৮৭ সালে এসএসসি, ১৯৮৯ সালে এইচএসসি এবং ১৯৯২ সালে ¯œাতক পাস করেন। এছাড়া, ২০০৮ সাল থেকে তিনি দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নতুন কমিটিতে ফের সদস্য হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতেও কামরান দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। এবারও তিনি স্বপদে বহাল থাকলেন।
এছাড়া, ডা: মুশফিক হোসেন চৌধুরী হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবার নতুন করে স্থান নিলেন তিনি । সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে অধ্যাপক রফিকুর রহমান দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। এবার তিনি বাদ পড়েছেন।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের এবারকার ঘোষিত কমিটিতে উল্লিখিত তিনজন ছাড়াও প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে নূরুল ইসলাম নাহিদ এবং উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য হিসাবে যথাক্রমে আবুল মাল আবদুল মুহিত, ইনাম আহমদ চৌধুরী এবং এডভোকেট সৈয়দ আবু নছর স্থান পেয়েছেন।