মাঠে আমনের ফলন দেখতে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার

নয়ন বাবু, নওগাঁ প্রতিনিধি : মাঠে নতুন ফসলের ঘ্রান ছড়াচ্ছে আমনের পাকা ধান। চলতি মৌসুমের ধান ঘরে তুলতে কাটা মাড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাষিরা। হেমন্তের মৃদু বাতাসে সোনালী শীষে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন। ক’দিন পরেই নতুন ধান-চালে ভরে উঠবে কৃষকের গোলা।
মাঠের ফসল দেখতে শনিবার দুপুরে নওগাঁর নিয়ামতপুরে যান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ধানক্ষেতের মধ্যে কিচ্ছুক্ষন হেঁটে ঘুরে দেখেন পাকা ধানের ফলন। ফসল দেখে পুলকিত হোন মন্ত্রী। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়স্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটওয়ারী, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
মন্ত্রী মাঠে গিয়ে চাষিদের সাথে কথা বলেন। চলতি আমন ফসল ছাড়াও অন্যান্য চাষাবাদ ও গ্রামীন অর্থনীতির খোঁজ খবর নেন।
ফসল দেখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই পুরোদমে শুরু হবে আমন ধানের কাটা মাড়াই। এরমধ্যে যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করতে না হয়, তাহলে বাম্পার ফলন ঘরে উঠবে। বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৫ মন পর্যন্ত ফলন হবে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
এসময় চাষিদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত ফসলে লাভবান করতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রম বারের মত সরকারী ভাবে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২৬ টাকা কেজি দরে ২০ নভেম্বর থেকে সারাদেশে একযোগে সরাসরি প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হবে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি বিভাগ থেকে চাষি তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে।
সারাদেশে এবার আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি মেট্রিক টন। বাম্পার ফলন হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিক খেয়াল রেখেই সরকারী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ধানের পাশাপাশি সরকারী ভাবে সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৫০ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে।
সরকারী গুদামে ধান-চাল সরবরাহে কোন ভাবেই মধ্যস্বত্ত্বভোগী, দালাল চক্র কিম্বা দলীয় নেতা স্থান পাবে না এমন প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সরাসরি খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
মন্ত্রী আরো বলেন- দেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্ত্বে। দেশের চাহিদা ও আপদকালীন মজুত রেখে চাল রপ্তানীর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমন উঠার পর রপ্তানীর নতুন লক্ষ্য ঠিক করা হবে।
খাদ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেন স্থানীয় চাষিরা। কৃষকরা বলেন- এবার ধানের ফলন ভাল হয়েছে। সরকারী ভাবে বেঁধে দেওয়া দরে তারা খুশি। তবে এই দর খোলা বাজরেও নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরেন। এজন্য নজরদারী বাড়ানোর কথা বলেন চাষিরা।
গেল বোরো মওসুমে বাজার দর কম পেয়ে অনেক চাষিকেই লোকসান গুনতে হয়েছে। সেই ক্ষতি এবার পুশিয়ে নিতে চান তারা।

Next Post Previous Post