বিমান বহরে তৃতীয় ড্রিমলাইনার গাংচিল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘গাংচিল’র উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার অপরাহ্ণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ‘গাংচিল’ উদ্বোধনকালে যাত্রীদের উন্নত সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সবাইকে এর প্রতি যতœবান হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,‘ আমি অনুরোধ করবো আমার গাংচিল যেন ভালভাবে ডানা মেলে উড়তে পারে আকাশে, সবাই যতœ নেবেন। মনে রাখতে হবে এটা নিজ দেশের নিজস্ব সম্পদ।’ এর আগে বিমান বন্দরের ভিভিআইপি টারমাকে ফিতা কেটে ‘গাংচিল’ উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী উড়োজাহাজটিতে আরোহণ করেন এবং ককপিটসহ বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং পাইলট এবং ক্রুদের সঙ্গে কথা বলেন। এ উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির উন্নতি,সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতি কামণা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহিবুল হক, বিমানের বোর্ড অব ডিরেক্টরস’র চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব:) মুহাম্মাদ এনামুল বারী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও ক্যাপ্টেন ফরহাত হাসান জামিল স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রি পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিনবাহিনী প্রধানগণ, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বিকেল সাড়ে ৫ টায় উদ্বোধনী ফ্লাইটে (বিজি-০২৭) আবুধাবির উদ্দেশে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করবে ’গাংচিল’। ১৫তম বিমান হিসেবে তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার গত ২৫ জুলাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে যুক্ত হয়। ২৫ জুলাই বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল অবস্থিত বোয়িং ফ্যাক্টরি থেকে থেকে সরাসরি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। ‘আকাশবীণা’ নামের প্রথম বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি গত বছরের আগস্টে এখানে আসে। ‘হংসবলাকা’ নামের দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি আসে গত বছরের ডিসেম্বরে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের একটি চুক্তি করে। ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ২টি ৭৩৭-৮০০ এবং ৩টি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। ‘রাজহংস’ নামের চতুর্থ ড্রিমলাইনারটি আগামী মাসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যুক্ত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সবক’টি ড্রিমলাইনারের নামকরণ করেছেন। এগুলো হলো পালকি, অরুণ আলো, আকাশ প্রদীপ, রাঙা প্রভাত, মেঘদূত, ময়ূরপঙ্খী, আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাংচিল ও রাজহংস। ২৭১ আসনের বোয়িং ৭৮৭-৮ গাংচিল ড্রিমলাইনারটিতে বিজনেস ক্লাস ২৪টি এবং ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস রয়েছে। বিজনেস ক্লাসের ২৪টি আসন ১৮০ ড্রিগ্রি পর্যন্ত রিক্লাইন্ড সুবিধা এবং সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ভ্রমণ করতে পারবেন । এছাড়া, প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিক এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। একই সঙ্গে ড্রিমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমে (আইএফই) থাকবে ১০০টির বেশি ক্ল্যাসিক থেকে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র। অন্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ জ্বালানি-সাশ্রয়ী করে তৈরি করা হয়েছে। এটি ঘণ্টায় গড়ে ৬৫০ মাইল বেগে বিরতিহীনভাবে ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম। অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার সমদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ও ওয়াইফাই সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। যাত্রীরা ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন এবং বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে অবস্থিত বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।



from BDJAHAN https://ift.tt/2ZkBXOX
via IFTTT
Next Post Previous Post