ইবি ক্যাম্পাসে আশ্রয় নিলো অতিথি পাখিরা।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি)। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা নানা প্রজাতির এসব অতিথি পাখি আশ্রয় নিয়েছে ক্যাম্পাসের মফিজ লেক এলাকায়। প্রতিবছর শীতকাল এলেই জলাশয়, বিল, হাওড়, পুকুর ভরে যায় নানা রংবেরঙের নাম না জানা পাখিতে। আদর করে আমরা সেগুলোকে বলি অতিথি পাখি। নাম অতিথি হলেও এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয় নিজেদের জীবন বাঁচাতে।

কুয়াশাচ্ছন্ন ও শীতের আবহাওয়ায় সবুজে সুশোভিত বিশাল এই ক্যাম্পাসে অতিথি পাখিদের কলরব পাখিপ্রেমীদের মুগ্ধ করছে। কিচির-মিচির শব্দে নতুন এক আবহ সৃষ্ঠি হয়েছে ক্যাম্পাসে। এছাড়া পাখিপ্রেমীদের দলে দলে আগমনে ক্যাম্পাসকে করেছে আরো প্রাণবন্ত।
শীত সহ্য করতে না পেরে অতিথি পাখিরা যে দেশে তুলনামূলক শীত কম সেখানেই চলে যায়। তাছাড়া শীতপ্রধান দেশে পাখিদের খাবার সংগ্রহে প্রচন্ড হিমশিম খেতে হয়। সেসময় ওইসব দেশে তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের নিচে। তাই শীত এলেই উত্তর মেরু, সাইবেরিয়া, ইউরোপ, এশিয়ার কিছু অঞ্চল, হিমালয়ের আশপাশের কিছু অঞ্চলের পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে চলে আসে তুলনামূলক কম ঠান্ডার অঞ্চলের দিকে। এছাড়া হিমালয়ের উত্তর দিকের দেশ সাইবেরিয়া থেকে বেশি অতিথি পাখি আসে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে- সরালি, ল্যাঞ্জা হাঁস, খুঁনতে হাঁস, বালি হাঁস, মানিকজোঁড় প্রভৃতি। অতিথি পাখি ছাড়াও ইবি ক্যাম্পাসে অনেক প্রজাতির দেশীয় পাখির মেলা বসে। নানান বর্ণের এই পাখিগুলো রাতে স্থান করে নেয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গাছের ডালে। সূর্য ওঠার আগেই লেকের আশেপাশে নিজেদের সৌন্দর্য বিলাতে থাকে। ক্যাম্পাসের হালকা কুয়াশায় এ যেন এক অন্যরকম সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে সকাল-সন্ধ্যায় ভিড় জমায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শাহরিয়ার সুমন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, অতিথি পাখি দেখার জন্য প্রতিদিন সকালে মফিজ লেকে আসি। প্রতি বছর অতিথি পাখি এসে যেন নির্বিঘ্নে থাকতে পারে সেজন্য ইবির পুকুর ও লেকগুলো পরিষ্কার রাখা সকলের দায়িত্ব। এদিকে নান্দনিক লেকের সংস্কার কাজ প্রায় শেষের দিকে। এরইমধ্যে লেকের উড়াল ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মফিজ লেকের মাঝ খানেই ব্রিজটি অবস্থিত। বিশাল এই উড়াল ব্রিজ দেখার জন্য প্রতিদিন দর্শনার্থীরা ভিড় করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে অতিথি পাখি আমাদের দেশে এসেছে একটু উষ্ণতার জন্য। অথচ একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী শুধু অর্থের লোভে নির্মমভাবে এসব অতিথি পাখি শিকার করছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুসারে অতিথি পাখি শিকার ও বিক্রয় করা দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এ আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নেই বলে এই মৌসুমে পাখি শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে যেন নজর দেন।

The post ইবি ক্যাম্পাসে আশ্রয় নিলো অতিথি পাখিরা। appeared first on BD Time.



from BD Time http://bit.ly/2Q2MNEE
via IFTTT
Next Post Previous Post