দুই স্বামীকে খুন করার পর তৃতীয় বিয়ে করা হল না আর অদিতির।

দুই বিয়ে, দুই স্বামীরই রহস্যমৃত্যু। তৃতীয় বিয়ের ইচ্ছেপূর্ণ না হওয়ায় আপাতত পুলিশের জালে অদিতি চক্রবর্তী। কলকাতার খড়দহের প্রৌঢ় প্রতুল চক্রবর্তী খুনের ঘটনায় আপাতত মূল অভিযুক্ত মৃতের স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একের পরে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। তদন্তকারীদের ধারণা, এখনো অনেক তথ্য চেপে যাচ্ছে কলকাতা বিমানবন্দরের উচ্চপদস্থ চাকুরে অদিতি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে ২০০০ সালে প্রথমে কলকাতা বিমানবন্দরেরই এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জয়দীপ বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয় অদিতির। বারাসতে জয়দীপের সঙ্গে থাকত অদিতি। বিয়ের কয়েকমাসের মধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় জয়দীপের মায়ের। সেই সময়ে অদিতির দাবি ছিল, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে মারা যান তার শ্বাশুড়ি। এর পরের দু’-তিন বছরে বারাসতের ওই বাড়িতেই জয়দীপের আরো দুই আত্মীয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ২০০৪ সালে একই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় অদিতির স্বামী জয়দীপের নিথর দেহ। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। এই সমস্ত ঘটনার সঙ্গে অদিতির যোগাযোগ কতটা, তা ফের খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ।

জয়দীপের মৃত্যুর পরে তার পরিবারের তরফ থেকে পুলিশে অভিযোগও দায়ের হয়। অদিতি এবং তার বাপের বাড়ির বাড়ির লোককে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। যদিও, প্রথম পক্ষের স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় ছাড় পেয়ে যান অদিতি। জয়দীপ-অদিতির একটি পুত্রসন্তানও ছিল। জয়দীপের মৃত্যুর পরে তার চাকরিটিও পায় অদিতি। কয়েক বছরের মধ্যে বারাসতে জয়দীপের বাড়ি বিক্রি করে দেয় সে। জয়দীপের বিমার প্রচুর টাকাও পায় অদিতি। কাশীপুরে ফ্ল্যাট কিনে ছেলেকে নিয়ে থাকতে শুরু করে সে।

এর পরেই প্রতুলের সঙ্গে আলাপের পরে তাকে বিয়ে করে অদিতি। অদিতি এবং প্রতুলের এক মেয়েও রয়েছে। তবে শেষ কয়েকবছরে আর্থিক সমস্যায় পড়েন প্রতুল। যার জেরে প্রচুর ধার হয়ে যায় তার। ধার শোধ করতে অদিতির কাছেই বার বার টাকা দাবি করতেন প্রতুল। পাওনাদাররাও বাড়িতে এসে চাপ দিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত প্রতুলকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় অদিতি। সূত্রের খবর, গত মে মাসে অদিতি এবং প্রতুলের ডিভোর্স হয়। এর পর থেকেই ফের বিয়ের পরিকল্পনা করে অদিতি। এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও হয়। তা জানতে পেরে বাগড়া দেন প্রতুল। অদিতির হবু স্বামীর কাছে তিনি দাবি করেন, তার এবং অদিতির ডিভোর্স হয়নি। এতেই রেগে যায় অদিতি।

জেরায় অদিতি পুলিশকে জানিয়েছে, ডিভোর্সের পরে তাকে টাকা দেয়ার কথা ছিল প্রতুলের। কিন্তু বার বারই তাকে বিভিন্ন জায়গায় টাকা দেওয়ার নাম করে ডেকে প্রতুল হেনস্তা করতেন বলে অভিযোগ অদিতির। ঘটনার দিনও প্রতুলের খড়দহের ফ্ল্যাটে টাকা চাইতে যায় অদিতি। দু’ জনে মদ্যপানও করে। টাকা নিয়ে বচসা শুরু হওয়ার পরে তা ধস্তাধস্তিতে গড়ায়। তার পরেই মৃত্যু হয় প্রতুলের। কীভাবে অদিতি প্রতুলকে খুন করেছিল, তা জানতে অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করে পুলিশ। তার পরেও অবশ্য গোটা ঘটনা স্পষ্ট হয়নি তদন্তকারীদের কাছে। কারণ, এখনো পুলিশকে অদিতি বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের। পুলিশের আরো অনুমান, এই ঘটনায় অদিতির সঙ্গে আরো কেউ জড়িয়ে থাকতে পারে।

The post দুই স্বামীকে খুন করার পর তৃতীয় বিয়ে করা হল না আর অদিতির। appeared first on BD Time.



from BD Time http://bit.ly/2QNBtBs
via IFTTT
Next Post Previous Post